৬৮ নং সূরাহ | সূরাহ কালাম | Surah no 68 | Surah Qalam |

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। 

অর্থ- আল্লাহর নাম নিয়ে পড়া শুরু করছি, যিনি সীমাহীন দয়ালু এবং সীমাহীন করুণাময়।

নাযিল : মাক্কাহ, আয়াত : 52 টি।

কুরআনের শপথ।

68:1 নং আয়াহ : নূন, শপথ কলমের। তারা [80:15-16] যা (কুরআন) লিখছে, তা‌র‌ও (শপথ)।

নাবী (সা) পাগল ছিলেন না।

68:2 নং আয়াহ : আপনার প্রভুর নিয়মত/ দয়ায় আপনি পাগল নন [15:6, 51:52]।

নাবী (সা) এর প্রতিদান কখনও শেষ হবে না।

68:3 নং আয়াহ : এবং নিশ্চয়ই আপনার জন্য থাকবে এমন প্রতিদান, যা কখন‌ও ফুরিয়ে যাবে না।

# প্রশ্ন হবে- তাহলে কি সাধারণ মূমীন/ মুসলিমদের প্রতিদান ফুরিয়ে যাবে?? না, দেখুন 95:6, 41:8, 84:25 আয়াত।

নাবী (সা) এর চরিত্র কেমন ছিল??

68:4 নং আয়াহ : এজন্য যে, নিশ্চয়‌ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী [33:21]।

# একটি হাদীশ, আয়ীশাহ (রা) বলেন- “নাবী (সা) চরিত্র ছিল কুরআন” (মুসলিম, হাদীশ 746)। পবিত্র কুরআনে‌ও এর সত‍্যতা রয়েছে 45:18 তে।

তার মহানতা সম্পর্কে একটি হাদীশ। যা দেখলে বুঝতে পারবেন, কেন নাবী (সা) কে আল্লাহ বললেন- “নিশ্চয়‌ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী”! আমরা ইসলামের ইতিহাস থেকে জানি- ইয়াহুদী‌রা মুহাম্মাদ (সা) এর এবং ইসলামের চরম শত্রু ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইয়াহুদী‌দের প্রতি নাবী (সা) এর দেখুন- “একবার নাবী (সা) এর সামনে দিয়ে একটি জানাযা যাচ্ছিল। তখন তিনি মৃতদেহকে সম্মান দেওয়া‌র জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাকে বলা হল- এটা তো এক ইয়াহুদীর জানাযা। তিনি বললেন- সে কি মানুষ নয়”(বুখারী, হাদীশ 1312)??

   অনেকেই নাবী (সা) কে অমুসলিম বিদ্বেষী হিসাবে তুলে ধরেন। কিন্তু উক্ত হাদীশ প্রমাণ করে, তিনি মোটেও অমুসলিম বিদ্বেষী ছিলেন না। বরং তিনি যে মনবতাবাদের স্রষ্টা ছিলেন, তা সুস্পষ্ট।

   দুটি হাদীশ দেখুন, তিনি বলেছেন- “সাবধান, যে মুসলিম কোনও অমুসলিমের উপর অত‍্যাচার করবে বা তার রাষ্ট্রীয় প্রাপ্য কম দিবে কিংবা তার উপর ট‍্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দেবে অথবা তার সন্তুষ্টিমূলক সম্মতি ছাড়া তার কাছ থেকে কিছু নেবে, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিপক্ষে আল্লাহর থেকে বিচার চাইব”(আবু দাউদ, হাদীশ 3052)। এছাড়াও তিনি বলেছেন- “অমুসলিম‌কে হত‍্যা‌কারী মুসলিম জান্নাতে প্রবেশ করা তো দূরের কথা, জান্নাতের সুগন্ধ‌ও পাবে না”(বুখারী, হাদীস 3166)।

   এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হবে- “তিনি ব‍্যক্তিগত জীবনে কেমন ছিলেন”?? কারোর ব‍্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে, তার স্ত্রী ও বাড়ির কাজের লোকের থেকে জানতে পারা যাবে। তার কাজের লোক আনাস (রা) তার সম্পর্কে বলেন- “আমি দশ বছর যাবত রাসূল (সা) এর খিদমতে নিয়োজিত ছিলাম। আমার কোন‌ও কাজ সম্পর্কে তিনি কখন‌‌ও ‛উহ’ শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ করেন নি। আমার কোন‌ও কাজ দেখে কখন‌ও বলেন নি যে, তুমি এ কাজ করলে কেন?? কিংবা কোন‌ও কাজ না করলে কখন‌ও বলেন নি যে, তুমি এ কাজ করলে না কেন” (বুখারী, হাদীশ 6038)??

   এবার তার সম্পর্কে স্ত্রীর মন্তব্য শুনুন- “আসওয়াদ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ (রা) কে জিজ্ঞেস করলাম- “নাবী (সা) ঘরে থাকা অবস্থায় কি করতেন”?? তিনি বললেন- “ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ গৃহস্থলির প্রতিদিনের কাজকর্মে স্ত্রীদের সহায়তা করতেন। আর নামাজের সময় হলে নামাজের জন্য মাসজিদে চলে যেতেন” (বুখারী, হাদীশ 676)।

   আরও একটি হাদীশ- “আয়িশাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসূল (সা) কখনও তার কোন‌ও কাজের লোককে অথবা তার কোন স্ত্রীকে মারধোর করেন নি এবং নিজ হাতে জীবনে অন্য কাউকে প্রহার করেন নি”(ইবনে মাজাহ, হাদীশ 1984)।

   আর এখানেই শেষ নয়। নাবী (সা) স্বামীর চরিত্র সম্পর্কে স্ত্রীকে সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকার দিয়েছেন। নাবী (সা) বলেছেন- “তোমাদের মধ্যে সেই ব‍্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম” (তিরমিযী, হাদীশ 3895)। এখানে আর কিছু বলার প্রয়োজন নেই।

কিছু বিষয়ে ‛অপেক্ষা’ যথাযথ উত্তর দেয়।

68:5 নং আয়াহ : এত‌এব শীঘ্রই আপনি দেখতে পাবেন, তারাও দেখতে [52:30-31] পাবে।

68:6 নং আয়াহ : আপনাদের দুজনের মধ্যে কার মস্তিষ্কে সমস্যা [68:2] আছে!

কেউ কেউ নাবী (সা) কে ‛পথভ্রষ্ট’ বলতেন।

68:7 নং আয়াহ : নিশ্চয়ই আপনার প্রভু সবচেয়ে ভাল জানেন- কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে [6:117], আর তিনিই সবচেয়ে ভাল জানেন- পথপ্রাপ্তদের‌কে [20:135]।

মিথ‍্যাবাদী‌দের কথা শোনা/ অনুসরণ করা হারাম।

68:8 নং আয়াহ : এত‌এব মিথ‍্যাবাদী‌দের অনুসরণ করবেন না/ তাদের কথা মানবেন না।

মিথ্যা‌র প্রতি কোনও নমনীয়তা দেখানো হারাম।

68:9 নং আয়াহ : তারা চায়- আপনি (মিথ্যার প্রতি) নমনীয় হন, তাহলে তারাও (সত‍্যের প্রতি) নমনীয়‌তা অবলম্বন করবে।

অধিক শপথকারী বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।

68:10 নং আয়াহ : আর বিশ্বাস করবেন না এমন প্রত‍্যেক ব‍্যক্তিকে, যে কথায় কথায় শপথ [63:2, 58:16] করে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।

অপ্রমাণিত দোষ প্রচার ও কথাকে বিকৃত করা হারাম।

68:11 নং আয়াহ : যে পিছনে অপ্রমাণিত দোষ প্রচার করে [104:1, 49:12] এবং যে কথা বিকৃত করে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়।

# খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি হাদীশ- “যে কথা বিকৃত করে অশান্তি সৃষ্টি‌ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না” (বুখারী, হাদীশ 6056)।

উগ্র ও পাপীই কল‍্যাণকর কাজে বাধা সৃষ্টি করে।

68:12 নং আয়াহ : কল‍্যাণ মূলক কাজে বাধা সৃষ্টি করে, (কেননা) সে উগ্ৰ ও পাপী।

নিষ্ঠুর ও ঝগড়াটে ব‍্যক্তি জাহান্নামী।

68:13 নং আয়াহ : নিষ্ঠুর, তারপর ঝগড়াটে হ‌ওয়ার জন্য পরিচিত।

# একটি গুরুত্বপূর্ণ হাদীশ দেখুন- “যে নিষ্ঠুর ও ঝগড়াটে, সে জাহান্নামী” (বুখারী, হাদীশ 4918)।

মানুষ কেন নিষ্ঠুর ও ঝগড়াটে হয়ে ওঠে!

68:14 নং আয়াহ : এজন্য যে, সে সম্পদশালী ও অনেক সন্তানের পিতা।

68:15 নং আয়াহ : যখন তার কাছে আমাদের আয়াত সমূহ পাঠ করা হয়, তখন বলে- “এসব পূর্ববর্তী‌দের মিথ্যা গল্প কাহিনী” [16:24, 27:68]।

বদর যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের ভবিষ্যৎ বাণী।

68:16 নং আয়াহ : শীঘ্রই আমরা তার নাকের উপর (বদর যুদ্ধে পরাজয়ের) দাগ লাগিয়ে দেব।

আসহাবুল জান্নাত‌ (বাগানের মালিকরা) যা ভেবেছিল।

68:17 নং আয়াহ : নিশ্চয়ই আমরা তাদের‌কে (মাক্কাহ বাসীদেরকে) তেমন পরীক্ষায় ফেলেছি, যেমন ফেলেছিলাম বাগানটি‌র মালিকদের। তারা শপথ করেছিল যে, তারা অবশ্যই সকাল বেলা তা (ফল) আহরণ করবে।

68:18 নং আয়াহ : তারা এর চেয়ে ভিন্ন কোনও কিছু আশা করে নি।

# অর্থাৎ তারা ভাবে নি যে, তাদের সঙ্গে ভিন্ন কিছু‌ও ঘটতে পারে। তাদের নিজেদের উপর নির্ভরতা ছিল প্রচুর। অথচ আল্লাহর উপর নির্ভর থাকা উচিৎ ছিল। কেননা, পরিস্থিতি যে কোনও সময় তাদের বিরুদ্ধে যেতে পারে। সুতরাং তাদের ‛ইনশাআল্লাহ /যদি আল্লাহ চান’ (18:23-24) বলা বুদ্ধিমানের কাজ।

বাগানটি রাতের বেলায় ধ্বংস হয়েছিল।

68:19 নং আয়াহ : অতঃপর আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে বিপদ আসল, তখন তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল।

বাগানের অবস্থা যেমন হয়েছিল।

68:20 নং আয়াহ : বাগানের অবস্থা হয়ে গেল কেটে ফেলা ফসলের মতো।

মালিকরা বাগানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।

68:21 নং আয়াহ : সকালে তারা একে অপরের ডাক দিয়ে বলল-

68:22 নং আয়াহ : “চলো তোমাদের ক্ষেতের দিকে, যদি ফল আহরণ করতে চাও”।

বাগানের মালিকরা ছিল চরম কৃপণ।

68:23 নং আয়াহ : অতঃপর তারা চলল এবং নিঁচু শব্দে বলল-

68:24 নং আয়াহ : যে “আজ যেন তোমাদের কাছে কোনও নিরুপায় গরীব চলে না আসে” [74:44, 107:3]।

68:25 নং আয়াহ : আর তারা চলল, এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে।

# কঠোর সিদ্ধান্ত বলতে কি?? নিরুপায় গরীবদের কিছু দেব না।

বাগানের মালিকদের কৃপণতা‌র পরিণতি।

68:26 নং আয়াহ : কিন্তু তারা বাগানের অবস্থা দেখে বলে উঠল- “নিশ্চয়ই আমরা পথভ্রষ্ট হয়েছি”।

# অর্থাৎ এই বাগান তো আমাদের নয়, আমরা সম্ভবত ভুল বাগানে ঢুকে পড়েছি/ অন্য জনের বাগানে ঢুকে পড়েছি।

68:27 নং আয়াহ : (বুঝতে পারার পর বলল) “না, বরং আমরা বঞ্চিত হয়েছি”।

বাগানের মালিকরা যেভাবে নিজেদের ভুল বুঝতে পারল।

68:28 নং আয়াহ : তখন তাদের মধ্যে বুদ্ধিমান ব‍্যক্তিটি বলল- “আমি কি তোমাদের‌কে বলি নি যে, তোমরা তার তাসবীহ (পবিত্রতা বর্ণনা) কর না কেন”??

68:29 নং আয়াহ : তারা বলল- “আমাদের প্রভু পবিত্র। নিশ্চয়ই আমরা ছিলাম অধিকার হনন কারী” [51:19]।

68:30 নং আয়াহ : অতঃপর তারা মুখোমুখি হল এবং একে অপরকে তিরস্কার করতে লাগলো।

বাগানের মালিকরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে যা বলল।

68:31 নং আয়াহ : তারা বলল- “আফসোস আমাদের, আমরা ছিলাম অধিকার হনন কারী [70:24-25]।

68:32 নং আয়াহ : আশা করা যায় যে, আমাদের প্রভু আমাদের‌কে তার (ঐ বাগানের) চেয়ে উত্তম [8:70] কিছু দেবেন। নিশ্চয়ই আমরা আমাদের প্রভুর অভিমুখী [13:27, 4:115] হলাম”।

আল্লাহর শাস্তি কেমন হতে পারে??

68:33 নং আয়াহ : (আল্লাহর) শাস্তি এমনই হয়ে থাকে। পরবর্তী জীবনের শাস্তি (এর চেয়ে) অনেক বড় [41:16]। যদি তারা জানত!

জান্নাত সমূহ মুত্তাকীদের জন্য।

68:34 নং আয়াহ : নিশ্চয়ই মুত্তাকী (অপকর্ম থেকে দূরত্ব সৃষ্টিকারী) দের জন্য রয়েছে নিয়ামত/ অনুগ্রহে পূর্ণ জান্নাত সমূহ [39:74]।

মুসলিম অপরাধী, অপরাধী মুসলিম হতে পারে না।

68:35 নং আয়াহ : আমরা কি মুসলিম/ অনুগতদেরকে অপরাধীদের মতো গণ‍্য করবো??

# এর কাছাকাছি সুন্দর একটি হাদীশ- “ব্যভিচারী যখন ব্যভিচার করে, তখন সে মূমীন থাকে না এবং চোর যখন চুরি করে, তখন সে মূমীন থাকে না” (বুখারী, হাদীশ 6782)।

মূর্তি পূজার পক্ষে আল্লাহ কোনও কিতাব নাযিল করেন নি।

68:36 নং আয়াহ : কি হয়েছে তোমাদের?? তোমরা কিভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছ??

68:37 নং আয়াহ : তোমাদের কাছে কি (আল্লাহর নাযিল করা) কোনও কিতাব আছে [30:35, 43:21, 46:4], যা তোমরা তা পাঠ করে থাক (যাতে মূর্তি পূজার প্রমাণ আছে)??

আল্লাহর নাযিল করা কিতাবে যা আছে, তাই উত্তম।

68:38 নং আয়াহ : নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য তাতে যা আছে, সেটাই তোমাদের জন্য উত্তম।

# অর্থাৎ আল্লাহর নাযিল করা কিতাবে মূর্তি পূজার পক্ষে কোনও দলিল নেই। বরং আছে মূর্তি পূজা বিরোধী দলিল। আর সেটাই তোমাদের জন্য উত্তম।

যারা ভাবে- তাদের শাস্তি হবে না, তাদেরকে প্রশ্ন।

68:39 নং আয়াহ : নাকি তোমাদের সঙ্গে (শাস্তি না হ‌ওয়ার ব‍্যাপারে( আমাদের কোনও চুক্তি আছে, যা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং তোমরা যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাই পাবে??

68:40 নং আয়াহ : তাদের‌কে জিজ্ঞাসা করে দেখুন যে, তাদের মধ্যে কে (সেই চুক্তির) দায়িত্ব নেবে??

তাদের শরিক/ ঈশ্বর‌দের করুণ অবস্থা।

68:41 নং আয়াহ : নাকি (আল্লাহর হাত থেকে বাঁচাবার জন্য) তাদের অনেক শরিক আছে [7:194, 46:4-5]?? থাকলে তাদের শরিকদেরকে হাজির করুক [21:42-43]। যদি তারা হয়ে থাকে সত‍্যবাদী।

বিচার দিবসে সর্বপ্রথম আল্লাহর ‛পা’ প্রকাশিত হবে।

68:42 নং আয়াহ : সেদিন (সর্বপ্রথম আল্লাহর) পায়ের পাতা প্রকাশিত হবে। তাদেরকে ডাকা হবে সিজদা সমূহ করার জন্য, তখন তারা পারবে না।

# ইহজীবনে যারা নিজেকে আল্লাহ‌র কাছে সমর্পণ করার জন্য সিজদা করতেন, শুধুমাত্র তারাই সিজদা করতে পারবেন। আর যারা মুনাফিকী সহ সিজদা করতেন, তারা সিজদা করতে পারবেন না। এই সম্পর্কে হাদীশ রয়েছে বুখারীর 4919 এ। তবে 68:42 এর প্রসঙ্গটা মুশরিকদের। প্রশ্ন হবে- “মুশরিকরা সিজদা করতে পারবে না কেন”?? কারণ তারা আল্লাহ‌কে দেখতেই পাবেন না (83:15)।

কোন কারণে তারা সিজদা করতে পারবে না??

68:43 নং আয়াহ : তাদের দৃষ্টি সমূহ থাকবে অবনত।  তাদেরকে ঘিরে ধরবে যিল্লাত/ অপমান [70:44, 1027]। কেননা অবশ্যই পূর্বে তারা ছিল সুস্থ-সবল, তখন তাদের‌কে সিজদা সমূহের দিকে ডাকা হোত (কিন্তু সিজদা করত না/ সিজদা করতে অস্বীকার করত)।

কুরআন স্বীকার/ অস্বীকারের ব‍্যাপারে মানুষ স্বাধীন।

68:44 নং আয়াহ : তাদের‌কে ছেড়ে দিন, যে অস্বীকার করে এই হাদীশ‌/ বাণী (কুরআন) কে [4:137, 32:13, 26:4]। শীঘ্রই আমরা তাদের‌কে ধীরে ধীরে টান দেব, তারা তা জানতেও পারবে না।

আল্লাহ মানুষকে যথেষ্ট অবকাশ দেন।

68:45 নং আয়াহ : আমি তাদের‌কে অবকাশ [86:27, 63:11, 35:45] দিচ্ছি। নিশ্চয়ই আমার কায়দা/ কৌশল যথেষ্ট শক্তিশালী [3:178]।

নাবী (সা) ইসলাম প্রচারের বিনিময়ে পারিশ্রমিক চাইতেন না।

68:46 নং আয়াহ : আপনি কি তাদের কাছ থেকে কোনও পারিশ্রমিক/ প্রতিদান [38:86] চাইছেন যে, তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে [52:40]??

আল্লাহ গায়েবের জ্ঞান প্রকাশ করেন রাসূল‌দের কাছে।

68:47 নং আয়াহ : তাদের কাছে কি গায়েবের জ্ঞান আছে যে, তারা লিখে [52:41, 72:26-27] রাখে??

ইউনূস (আ) অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলেন, তার মতো হবেন না।

68:48 নং আয়াহ : সুতরাং আপনি ধৈর্য্য ধারণ করুন আপনার প্রভুর সিদ্ধান্তের জন্য [46:35]। মাছের সঙ্গীর মতো হবেন না। (সেই সময়ের কথা শুনুন) যখন তিনি বিষন্ন হয়ে ডেকেছিলেন [21:87]।

68:49 নং আয়াহ : যদি না তার প্রতি আপনার প্রভুর নিয়ামত/ অনুগ্রহ হোত, তাহলে তিনি নিন্দিত হয়ে উন্মুক্ত প্রান্তরে [37:145-147] নিক্ষিপ্ত হোত [21:88]।

68:50 নং আয়াহ : অতঃপর তাকে তার প্রভু গ্ৰহণ করে নিলেন এবং তাকে পূণ‍্যবান‌দের অন্তর্ভুক্ত [37:147] করলেন।

কুরআনে রয়েছে সর্বোচ্চ জ্ঞান।

68:51 নং আয়াহ : আর যারা সত্য অস্বীকারকারী, তারা যখন ‛সর্বোচ্চ জ্ঞান মূলক’ [45:20] কোনও কিছু শোনে, তখন তারা আপনাকে এমন ভাবে দেখে- যেন তাদের দৃষ্টি সমূহ দ্বারা আপনাকে আছাড় মারবে। আর বলে- “নিশ্চয়ই সে মহা পাগল” [44:14, 68:2]।

কুরআন মহাবিশ্ব সমূহের জন্য সংবিধান।

68:52 নং আয়াহ : আর তা (কুরআন) মহাবিশ্ব সমূহের জন্য সংবিধান ছাড়া কিছুই নয় [81:27]।

Rate this post
শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন