বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
অর্থ- আল্লাহর নাম নিয়ে পড়া শুরু করছি, যিনি সীমাহীন দয়ালু এবং সীমাহীন করুণাময়।
নাযিল : মাক্কাহ, আয়াত : 52 টি।
কুরআনের কাজ কি??
14:1 নং আয়াহ : আলিফ লাম র। কিতাবটি (কুরআন) তিনি নাযিল করেছেন আপনার কাছে। যেন আপনি মানব জাতিকে তাদের প্রভুর অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোয় [57:9, 2:257, 5:16] বের করে আনতে পারেন মহা শক্তিশালী ও মহা প্রশংসিত পথে [17:9, 34:6]।
আল্লাহ হলেন মহাবিশ্বের মালিক।
14:2 নং আয়াহ : আল্লাহ (তিনি), যিনি মহাবিশ্বে যা কিছু আছে, পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই তার। এবং সত্য অস্বীকারকারীরা ধ্বংস হবে, (তাদের জন্যেই) থাকবে কঠিন শাস্তি।
মানুষের মনে সন্দেহ/ সংশয় সৃষ্টি কারীর পরিণতি।
14:3 নং আয়াহ : যারা ইহজীবনকে পরবর্তী জীবনে চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় এবং মানুষ আল্লাহর পথে চলতে বাধা দেয় [47:32] এবং তাতে সন্দেহ/ সংশয় [50:25, 32:12] সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করে, তারাই ভ্রষ্টতার গভীরে রয়েছে।
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মাতৃভাষা ব্যবহারের নির্দেশ।
14:4 নং আয়াহ : আর আমরা এমন কোনও রাসূল প্রেরণ করি নি, যাকে তার জাতির ভাষা ছাড়া ভিন্ন ভাষায় পাঠানো হয়েছে [41:44]। (তা এজন্য যে) যেন তাদেরকে সুস্পষ্ট ভাবে বোঝাতে পারে। অতঃপর আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করেন [2:26, 2:99] এবং যাকে চান, তাকে পথ দেখান [13:17, 42:13]। আর তিনি মহা শক্তিশালী ও মহা বিজ্ঞানী।
# তাই এখন শুধু মাতৃভাষায় খুতবা নয়, নামাজ থেকে শুরু আজান সমস্ত কিছু মাতৃভাষায় করা উচিৎ। যদি নাবী (সা) ভারতে/ বাংলা প্রদেশে আসতেন, তাহলে তিনি খুতবা থেকে শুরু করে, নামাজ ও আজান সমস্ত কিছু মাতৃভাষায় করতেন। মানে, বাংলা ভাষায় করতেন। সুতরাং মাতৃভাষায় ইসলাম চর্চা ও পালন করতে হবে। নাবী (সা) আরবে এসেছিলেন, তাই সমস্ত কিছু আরবিতে করছেন।
নাবী (সা) এবং মূসা (আ) কাজ ছিল একই।
14:5 নং আয়াহ : আর অবশ্যই ইতিপূর্বে আমরা মূসাকে আমাদের আয়াত সমূহ সহ প্রেরণ করেছিলাম যে, আপনার কাওম/ জাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে নিয়ে আসুন [14:1]। এবং তাদেরকে (পৃথিবীতে গত হয়ে যাওয়া) আল্লাহর যুগ সমূহ দ্বারা শিক্ষা দিন। নিশ্চয়ই ওই সমস্ত ঘটনাবলীর মধ্যে রয়েছে নিদর্শন এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, যে পরম ধৈর্য্যশীল ও কৃতজ্ঞ।
বানী ইসরাঈলের উপর ফিরআউনদের অত্যাচার, আল্লাহর দয়া।
14:6 নং আয়াহ : এবং (শুনুন সেই সময়ের কথা) যখন মূসা তার কাওম/ জাতিকে বললেন- “স্মরণ কর আল্লাহর নিয়ামত/ অনুগ্রহের কথা, যা তোমাদের উপর করা হয়ে ছিল ফিরআউনের সম্প্রদায় হতে রক্ষা করে [2:50, 10:90]। যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্টতম কষ্ট দিত। যারা তোমাদের পুত্র সন্তানদের যাবেহ করত এবং জীবিত রাখত নারীদেরকে [28:4-5]। ঐ (পরিস্থিতির) মধ্যে ছিল তোমাদের জন্য তোমাদের প্রভুর পক্ষ হতে মহা পরীক্ষা [2:49-50]।
আল্লাহর কৃতজ্ঞ হলেই অধিক অনুগ্রহ পাওয়া যাবে।
14:7 নং আয়াহ : আর (শোন সেই সময়ের কথা) যখন তোমাদের প্রভু আজান/ ঘোষণা করেছিলেন- “অবশ্যই যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তাহলে তোমাদেরকে আরও অধিক (অনুগ্রহ) করব [2:57, 7:160]। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তাহলে নিশ্চয়ই আমার আযাব/ শাস্তি খুবই কঠিন”।
আল্লাহ আমাদের ইমান ও ইবাদতের ভিখারী নন।
14:8 নং আয়াহ : এবং মূসা বলেছিলেন- “যদি তোমরা এবং গ্ৰহবাসীদের সবাই একত্রিত ভাবে (আল্লাহকে) অস্বীকার করে, তবে নিশ্চয়ই তিনি পরম বে-পরোয়া ও প্রশংসিত” [64:6]।
14:9 নং আয়াহ : তোমাদের কাছে কি তোমাদের পূর্বের কাওম/ জাতি গুলোর তথ্য পৌঁছায় নি?? নূহ, আদ ও সামূদের এবং যারা তাদের পরে এসেছিল?? আল্লাহ ছাড়া তাদের সম্পর্কে কেউ জানে না। তাদের কাছে রাসূলরা এসে ছিলেন সুস্পষ্ট প্রমাণ সমূহ নিয়ে। (তারা অবাক হয়ে) তাদের হাত গুলো তাদের মুখে রাখল ও বলল- “নিশ্চয়ই আমরা অস্বীকার [41:14] করলাম ঐ বিষয়কে, যা নিয়ে তোমরা প্রেরিত হয়েছ। এবং তোমরা যে বিষয়ের দিকে আমাদের কে ডাকছ, নিশ্চয়ই আমরা ঐ বিষয়ে শাক/ সংশয়ের মধ্যে রয়েছি”।
মহাবিশ্ব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিন্দু হতে বিকশিত হয়েছে।
14:10 নং আয়াহ : রাসূলরা তাদেরকে বললেন- “তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে শাক/ সংশয়ে রয়েছ, যিনি অকল্পনীয় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিন্দু (সিঙ্গুলারিটি) হতে বিকশিত মহাবিশ্ব সৃষ্টিকারী [2:117]। তিনি তোমাদেরকে ডাকছেন তোমাদের যুনূব/ পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। এবং তোমাদেরকে অবকাশ দেবেন নিদিষ্টকাল পর্যন্ত”। তারা বলেছিল- “তোমরা তো আমাদের মতোই মানুষ ছাড়া [36:15] কিছুই নও। এবং আমাদের বাপ-দাদারা যার (মূর্তির) ইবাদত/ উপাসনা [34:43] করে এসেছে, তোমরা তা হতে আমাদেরকে বিরত রাখতে চাইছ?? (যদি তোমরা তাই চাও) তাহলে আমাদের কাছে নিয়ে এস সুস্পষ্ট প্রমাণ, যা অখণ্ডনীয়”।
প্রতিটা নাবী রাসূল ‛মানুষই’ ছিলেন।
14:11 নং আয়াহ : রাসূলরা তাদেরকে বললেন- “আমরা তোমাদের মতোই মানুষ ছাড়া অন্য কিছু নই [17:93, 41:6]। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাকে চান, তাকে (নাবী/ রাসূল বানিয়ে) ধন্য করেন [62:4]। আমাদের অউকাত নেই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসা [13:38, 29:50-51]]। আর মূমীনদের উচিৎ আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল/ নির্ভর করা [65:3]।
নির্ভরকারীদের উচিৎ আল্লাহর উপর নির্ভর করা।
14:12 নং আয়াহ : আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল/ নির্ভর করব [65:3] না?? অথচ তিনি আমাদের পথ গুলোর চেয়ে উত্তম পথ আমাদেরকে দেখিয়েছেন। আর তোমরা আমাদেরকে যে সমস্ত কষ্ট দিচ্ছ, সে বিষয়ে আমরা আল্লাহর জন্য স্ববর/ ধৈয্য ধারণ করব [46:35, 3:46]। তাওয়াক্কুল/ নির্ভরকারীদের উচিৎ আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল/ নির্ভর করা [65:3]।
অত্যাচারীদের ধ্বংস নিশ্চিত।
14:13 নং আয়াহ : এবং (শেষে) কাফির/ সত্য অস্বীকার কারীরা তাদের রাসূলদের বলল- “অবশ্যই তোমাদেরকে আমাদের আরদ্ব/ দেশ হতে বের করে দেব। নয়ত শীঘ্রই তোমরা আমাদের মিল্লাতে (প্রচলিত ধর্ম ব্যবস্থায়) ফিরে এস” [7:88]। অতঃপর তাদেরকে তাদের প্রভু ওহী করলেন- “অবশ্যই আমরা জ্বালিম/ অত্যাচারীদের ধ্বংস [58:21] করে দেব [14:42]।
14:14 নং আয়াহ : এবং অবশ্যই আমরা তাদের পরে তোমাদেরকে আরদ্ব/ ঐ দেশে প্রতিষ্ঠিত করব। ওটা তার জন্য, যে ভয় করে আমার মাকাম/ অবস্থানকে এবং ভয় করে আমার সাবধান বাণীকে”।
উগ্র স্বৈরাচারী ব্যর্থ হবে।
14:15 নং আয়াহ : তারা (রাসূলরা) বিজয় চাইলেন। আর ব্যর্থ হলো প্রত্যেক জাব্বার/ উগ্র স্বৈরাচারী [50:24]।
উগ্র স্বৈরাচারীর শাস্তি/ পরিণতি।
14:16 নং আয়াহ : তার (উগ্র স্বৈরাচারীর) জন্য পরবর্তীতে রয়েছে জাহান্নাম। আর তাকে পান করান হবে মারাত্মক শীতল পানিয় [38:57]।
জাহান্নামে সবাই মৃত্যুহীন।
14:17 নং আয়াহ : সে তা গিলতে চাইবে কিন্তু এত সহজে গিলতে পারবে না। তার কাছে প্রত্যেক দিক থেকেই আসবে মৃত্যু কিন্তু সে মরবে না [35:36, 87:13]। আর পরে তার জন্য থাকবে আরও কঠোর আযাব/ শাস্তি।
আল্লাহকে অস্বীকারকারীর সৎকর্মের পরিণতি।
14:18 নং আয়াহ : যারা তাদের প্রভুকে অস্বীকার করেছে [47:32], তাদের সৎ আমল/ কর্ম সমূহের উদাহরণ হল- ছাইয়ের মত। যা ঝড়ের দিনে বাতাস প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়। তারা নিজেদের অর্জন/ উপার্জনের কোনও কিছুই কাজে লাগাতে পারে না [13:17, 3:116]। ওটাই হল গভীর বিভ্রান্তি।
অন্য গ্ৰহে মানুষের মতো জীব রয়েছে।
14:19 নং আয়াহ : আপনি কি ভেবে দেখেন নি যে, আল্লাহ মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতে। যদি তিনি চান, তাহলে তোমাদেরকে সরিয়ে তোমাদের স্থলে (অন্য গ্ৰহ থেকে তোমাদের মতো) সৃষ্টিকে নিয়ে আসতে পারেন [65:12, 42:29]।
14:20 নং আয়াহ : আর ওটা করা আল্লাহর জন্য মোটেও কঠিন নয় [64:7]।
বিচার দিবসে পথভ্রষ্ট ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক।
14:21 নং আয়াহ : যেদিন তারা সকলেই আল্লাহর নিকট উপস্থিত [69:16-17] হবে। অতঃপর দুর্বলরা সবলদেরকে বলবে, যারা (ইহজীবনে) অহংকার করত- “নিশ্চয়ই আমরা ছিলাম তোমাদের অধীন/ অনুসারী। এতএব এখন তোমরা কি আমাদেরকে আল্লাহর আযাব/ শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারবে” [34:31-32, 33:66-68]?? তখন তারা (সবলরা) বলবে- “যদি আল্লাহ আমাদেরকে পথ দেখাতেন [13:27, 42:13], তাহলে অবশ্যই আমরা তোমাদেরকে পথ দেখাতাম [37:32]। এখন আমরা অস্থির হই কিংবা ধৈর্য্য ধারণ করি, উভয়ই আমাদের জন্য সমান। এখন (সংকোচিত মহাবিশ্ব থেকে) আমাদের পালিয়ে যাওয়ার কোনও জায়গা নেই [84:1-5]।
বিচার দিবসে শাইত্বান তার অনুসারীদের যা যা বলবে।
14:22 নং আয়াহ : আর (বিচার দিবসে) যখন বিষয়টির [50:27-29] মিমাংসা হয়ে যাবে, তখন শাইত্বান বলবে- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন, তা সত্য [38:85]। এবং আমি তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলাম, তা খেলাফ/ ভঙ্গ করলাম। তোমাদের উপর আমার কোনও কতৃত্ব ছিল না। এটা ছাড়া যে, আমি তোমাদেরকে দাওয়াত/ ডাক দিয়েছিলাম এবং তোমরা তাতে সাড়া দিয়েছিলে। সুতরাং তোমরা আমাকে তিরষ্কার কর না, তিরষ্কার কর নিজেদেরকে। আমি তোমাদের উদ্ধারকারী নই [3:173], আর না তোমরা আমার উদ্ধারকারী। এবং ইতিপূর্বে যে তোমরা আমাকে (আল্লাহর সঙ্গে) শরীক করেছিলে, নিশ্চয়ই আমি তা অস্বীকার করছি [59:16]। নিশ্চয়ই জ্বালিম/ সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক আযাব/ শাস্তি”।
জান্নাতীদের সালাম দেওয়া হবে।
14:23 নং আয়াহ : এবং যারা সত্য স্বীকার করেছে ও সৎকর্ম করে/ করবে, তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান হবে। যাতে প্রবাহিত থাকবে নদনদী। তারা সেখানে অনন্ত কাল বসবাস করবে তাদের রাবের অনুমতিক্রমে [11:108]। তাদের অভিবাদন হবে সালাম [56:26]।
কালিমাহ ত্বায়্যিব ও তার শাখা প্রশাখা।
14:24 নং আয়াহ : আপনি লক্ষ্য করেন নি, আল্লাহ কিভাবে কালিমাহ ত্বায়্যিবের উদাহরণ [37:35, 47:19] দেন?? তা পবিত্র/ উৎকৃষ্ট গাছের মত, যার মূল/ শেকড় সুদৃঢ়। যার শাখা প্রশাখা/ ডালপালা থাকে অনেক ঊর্ধ্বে বিস্তৃত [21:25]।
# ‛লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হল- ইসলামের মূল। এবং সমগ্র ইসলাম তার শাখা প্রশাখা। আর ইমানের সবচেয়ে বড় শাখা হল- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। ইমানের শাখা প্রশাখা 69/ 79 এর বেশি (মুসলিম, হাদীশ 35/1)। যদিও প্রচলিত অনুবাদে 60/ 70 এর বেশি বলা হয়। কিন্তু গণনার ক্ষেত্রে আরবি শব্দ ‛বিদ্বউন’ শব্দ দ্বারা 9 পর্যন্ত বোঝান হয়ে থাকে। মানে 60/ 70 প্রচলিত অনুবাদ। এটা হবে 69/ 79 এর বেশি।
14:25 নং আয়াহ : যা (গাছটি) তার প্রভুর অনুমতিক্রমে প্রতি মুহূর্তে ফল প্রদান করে। আল্লাহ মানব জাতির জন্য উদাহরণ দিয়ে থাকেন। যাতে তারা চিন্তা ভাবনা/ গবেষণা করে।
# আল্লাহ এখানে ‛লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ ছাড়া কোনও ঈশ্বর/ উপাস্য নেই’ সম্পর্কে গবেষণা করতে বলেছেন। প্রশ্ন হবে- “এখানে গবেষণা করার মতো কি আছে”?? 23:91 এ যান।
কালিমাতুন খাবীশ/ অপবিত্র কালিমাহ’র উদাহরণ।
14:26 নং আয়াহ : এবং ‛কালিমাতুন খাবীশ’ (অপবিত্র বাক্য/ বহুত্ববাদী বাক্যের) উদাহরণ হল- একটি নিকৃষ্ট গাছের মতো, যাকে মাটির উপর থেকে উপড়ে নেওয়া যায়। যার কোনও স্থিতি/ ভিত্তি নেই।
রাসূল থেকে হাদীশ বর্ণিত হওয়ার ভবিষ্যৎ বাণী।
14:27 নং আয়াহ : যারা সত্য স্বীকার করেছে, তাদেরকে (রাসূল থেকে) প্রমাণিত কাওল/ কথা (সাহীহ ও হাসান হাদীশের) মাধ্যমে ইহজীবন ও পরবর্তী জীবনে অবিচল রাখবেন। আর সীমালঙ্ঘনকারীদের পথভ্রষ্ট করেন [2:26, 2:99, 4:115]। আর আল্লাহ যা চান, তাই করেন (তার সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার কেউ নেই)।
# ‛প্রমাণিত কাওল বা কথা’- কিন্তু কার প্রমাণিত কথা?? আল্লাহর কাওল বা কথা তো সত্য। তা আমরা প্রমাণ করি না। তা আমরা প্রমাণ ছাড়াই সত্য বলে গ্ৰহণ করি। আমরা শুধুমাত্র হাদীশকেই প্রমাণ করি, প্রমাণিত হলে তবেই তা গ্ৰহণ করি। আমরা অপ্রমাণিত হাদীশ গ্ৰহণ করি না। তাই এখানে ‛প্রমাণিত কাওল বা কথা’ দ্বারা হাদীশকে বোঝান হচ্ছে, তা তে সন্দেহ থাকল না। এছাড়াও রাসূল থেকে হাদীশ বর্ণিত হবে- তার প্রমাণ 66:3 ও 93:11 তেও রয়েছে।
আলেম উলেমাদের জন্য মুসলীম সমাজের বর্তমান পরিস্থিতি।
14:28 নং আয়াহ : আপনি কি তাদেরকে দেখেন নি, যারা আল্লাহর নিয়ামত/ অনুগ্ৰহের বিনিময়ে অকৃতজ্ঞতা [8:53] দেখিয়েছে এবং নিজেদের কাওম/ জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে??
জাতির জন্য ক্ষতিকর আলেম উলেমাদের পরিণতি জাহান্নাম।
14:29 নং আয়াহ : তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এবং তা নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল [98:6]।
পীরপন্থী আলেম উলেমা ও তাদের লোভ লালসা।
14:30 নং আয়াহ : আর তারা আল্লাহর (ওসীলা হিসাবে) সমকক্ষ হাজির করে, যেন তারা (মানুষকে) তার (আল্লাহর) পথ হতে পথভ্রষ্ট করতে পারে। আপনি বলুন- “ভোগ করতে থাকো [39:8]। অতঃপর তোমাদের ফিরে যাওয়ার একমাত্র ঠিকানা (জাহান্নামের) আগুন” [77:46]।
স্বালাত/ আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য তাগিদ।
14:31 নং আয়াহ : আমার বান্দাদের মধ্যে যারা সত্য স্বীকার করেছে, তাদেরকে আপনি বলুন- তারা যেন স্বালাত/ আল্লাহ বিধান প্রতিষ্ঠা করে এবং তাদেরকে রিযিক হিসাবে যা দেওয়া হয়েছে, তা হতে (দীন প্রতিষ্ঠার জন্য) প্রকাশ্যে ও গোপনে দান করে [2:43]। সেই দিন আসার পূর্বে, যে দিন ব্যাবসা-বাণিজ্য থাকবে না [2:254, 63:10], আর না থাকবে বন্ধুত্ব [43:67, 70:10]।
মানুষ দ্বারা নদনদী নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যৎ বাণী।
14:32 নং আয়াহ : আল্লাহ (হলেন তিনি), যিনি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। এবং তিনিই বায়ুমণ্ডল থেকে বৃষ্টি নামান। এবং তা (পানি) দ্বারা (গাছ থেকে) বের করেন বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, যা তোমাদের জন্য রিযিক। এবং তিনিই জলযান গুলোকে তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছেন, যা তারই নির্দেশে সমুদ্র সমূহে চলাচল করে। এবং তিনিই নদনদী গুলোকে (খুবই শীঘ্রই) তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দেবেন [16:14]।
মানুষ একদিন সূর্য চন্দ্র ও পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি নিয়ন্ত্রণ করবে।
14:33 নং আয়াহ : এবং তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দেবেন [16:12, 45:13]। যা একই (ঘূর্ণন) নিয়মের অধীন। আর রাত ও দিনকেও (পৃথিবী ঘূর্ণনকেও) তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দেবেন।
# নদনদী নিয়ন্ত্রণ তবুও ঠিক আছে। কিন্তু “পৃথিবীর ঘূর্ণন নিয়ন্ত্রণ” একটু বাড়াবাড়ি নয়?? ভাই, যেখানে সূর্য চন্দ্র নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যৎ বাণী রয়েছে, সেখানে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি নিয়ন্ত্রণ বাড়াবাড়ি কিভাবে হতে পারে?? দাঁড়ান, একটু সময় দেন। বিস্তারিত বুঝিয়ে ভাবে বলি। একটা সাধারণ বিষয় তুলে ধরি, তাহলেই বুঝতে পারবেন। চিনের/ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নদী বাঁধ হল- থ্রি জর্জেস বাঁধ (Three Gorges Dam)। চিনের তৈরি এই বাঁধ পৃথিবীর ঘূর্ণনকে 0.06 মাইক্রোসেকেণ্ড কমিয়ে দিয়েছে।
তবে এখানেই শেষ নয়, বিপুল জলরাশির চাপে পৃথিবীর নিরক্ষরেখা সামান্য ফুলে গেছে, দুই মেরু চেপে গেছে। শুধু কি তাই! পৃথিবী 23.5 ডিগ্রি হেলে থাকে, তাতেও সামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে। চাইলে গুগলে সার্চ করে তথ্য গুলো যাচাই করে দেখে নিন। প্রশ্ন হবে- “কিভাবে সম্ভব হল এগুলো”?? উত্তর সহজ- পৃথিবীর একটা অংশে হঠাৎ করে চাপ বেড়ে/ কমে গেলে, তার প্রভাব পৃথিবীর উপর এভাবেই পড়ে। এমনকি পৃথিবীতে বড় ধরণের ভূমিকম্প বা সুনামি হলেও এরকম প্রভাব দেখা যায়। যদিও ধীরে ধীরে আবার ভারসাম্য সৃষ্টি হয় এবং স্বাভাবিক হয়ে যায়।
যাইহোক, পৃথিবীর গতি যে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, সেটা আপনাকে বোঝানোর জন্য এত কথা বলতে হল। মানে, রাত ও দিনকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এতক্ষণে হয়ত সেটা বুঝে নিয়েছেন নিশ্চয়ই!
আল্লাহর নিয়ামত গুলো গুণে শেষ করা যাবে না।
14:34 নং আয়াহ : তার থেকে যা তোমাদের প্রাপ্য, তিনি তোমাদের দিয়ে দিয়েছেন/ দেবেন [45:13]। সুতরাং যদি তোমরা আল্লাহর নিয়ামত সমূহ গুণতে যাও, তাহলে তা গুণে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অতিমাত্রায় জ্বালিম/ সীমালঙ্ঘনকারী ও খুবই কাফির/ অকৃতজ্ঞ।
মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে ইবরাহীম (আ) এর দুয়া।
14:35 নং আয়াহ : আর (শুনুন সেই সময়ের কথা) যখন ইবরাহীম বলেছিলেন- “হে আমার প্রভু, এই শহর (মাক্কা) কে শান্তিপূর্ণ/ নিরাপদ করুন [2:126, 29:67]। এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে দূরে রাখুন [22:30]।
14:36 নং আয়াহ : হে আমার প্রভু, নিশ্চয়ই এই নারী মূর্তি (দেবী প্রতিমা) গুলো মানবজাতির মধ্য হতে বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে (১)। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে, তবে নিশ্চয়ই সে আমার দলভুক্ত। আর যে আমার অবাধ্য হবে, তবে নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
১) তারমানে এই নয় যে, তাদের/ দেবীদের কোনও ক্ষমতা আছে। বরং তাদের কারণে বহু মানুষ পথভ্রষ্ট হয়েছে। যেমন একজন কৃষক বলেন- “আজকের বৃষ্টি আমাকে ধ্বংস করে দিল”। তারমানে এই নয় যে, বৃষ্টি তাকে ধ্বংস করেছে। বরং বৃষ্টির কারণে তার চাষের ফসল নষ্ট হয়েছে। বিস্তারিত জানতে দেখুন 22:73, 25:3 আয়াহ।
আরব উপদ্বীপে চাষাবাদের ভবিষ্যৎ বাণী।
14:37 নং আয়াহ : হে আমাদের প্রভু, নিশ্চয়ই আমার বংশধরদের মধ্যে কিছু বংশধরদের (বানী ইসমাঈলকে) ছেড়ে যাব এই চাষাবাদহীন উপত্যকা/ উপদ্বীপে আপনার ‛বাইতুল হারামের’ কাছে। হে আমার প্রভু, যেন তারা (বাইতুল হারামে) স্বালাত/ নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। এতএব আপনি মানবজাতির মধ্যে কিছু মানুষের আফীদা/ মনোযোগ সমূহকে তাদের (আরববাসীদের) প্রতি আকৃষ্ট করে দিন। আর তাদেরকে রিযিক প্রদান করুন শস্য/ চাষাবাদ থেকে। যাতে তারা কৃতজ্ঞ হয়।
# একটি হাদীশ। নাবী (সা) বলেছেন- “ততদিন কিয়ামাত হবে না … যতদিন না পুনরায় আরব ভূমি চারণভূমি ও নদনদীতে পূর্ণ হয়ে যাবে”(মুসলিম, হাদীশ 157)। বিস্তারিত জানতে 14:45 দেখুন।
মাহাবিশ্বের কোনও কিছুই আল্লাহর অজ্ঞাতে নেই
14:38 নং আয়াহ : হে আমাদের প্রভু, নিশ্চয়ই আপনি জানেন- যা আমরা গোপনে করি, আর যা প্রকাশ্যে করি”। শুধু এই নয়, মহাবিশ্বের অদৃশ্য বস্তু গুলোও (যেমন, ডার্ক ম্যাটার) আল্লাহর অজ্ঞাতে নেই [10:18, 69:38-39]।
আল্লাহ প্রত্যেকটা দুয়াই শোনেন।
14:39 নং আয়াহ : সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাক প্রদান করেছেন। নিশ্চয়ই আমার প্রভু দুয়া/ প্রার্থনা শুনেন [2:186, 50:16]।
আল্লাহ দুয়া কবুলও করেন।
14:40 নং আয়াহ : হে আমার প্রভু, আমাকে স্বালাত/ আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠাকারী বানিয়ে দিন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও। হে আমাদের প্রভু, আপনি তো দুয়া কবুল করেন [40:60, 11:61]।
# খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন- “তাহলে সব কবুল হয় না কেন”?? কারণে দুয়া কবুল হয় না। A) চেষ্টা বিহীন দুয়া, B) অযৌক্তিক দুয়া, C) যে দুয়ায় আপনার ক্ষতি হতে পারে, D) যে দুয়ায় অন্যের ক্ষতি হতে পারে। এই কারণ গুলো বাদ দিয়ে দুয়া করুন। অবশ্যই দুয়া কবুল হবে।
ইবরাহীম (আ) তার মুশরিক পিতার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করলেন।
14:41 নং আয়াহ : হে আমাদের প্রভু, যেদিন প্রতিষ্ঠিত হবে ‛হিসাব গ্ৰহণ দিবস’ (বিচার দিবস), সেদিন আমাকে, আমার মাতাপিতাকে [19:47] ও মূমীনদেরকে ক্ষমা করে দেবেন”।
# যদিও ইবরাহীম (আ) তার মুশরিক পিতার জন্য দুয়া করেছেন। কিন্তু 9:113-114 তে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে পরিষ্কার ভাবে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। ইবরাহীম (আ) তার পিতাকে ওয়াদা করে ছিলেন যে, “আমি আপনার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব”। সে জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন।
অত্যাচারী/ অত্যাচারীরা সাবধান, প্রতিশোধ খুবই কঠিন হবে।
14:42 নং আয়াহ : আর আপনি কখনই ভাববেন না যে, জ্বালিম/ অত্যাচারীরা যে কর্ম করছে, সেই সম্পর্কে আল্লাহ [14:13, 11:102] গাফিল/ উদাসীন। তিনি তো শুধুমাত্র অবকাশ দিচ্ছেন [3:178, 63:10-11] সেই দিন পর্যন্ত, যে দিন (নির্যাতিতদের প্রতিশোধের ভয়ে) তাদের চোখ দাঁড়িয়ে যাবে [2:214]।
পুনরুত্থানের সময় সবাই হবে স্মৃতিহীন।
14:43 নং আয়াহ : (পুনরুত্থানের দিন) তারা তাদের মাথা গুলো তুলে দৌড়াতে থাকবে [54:8, 70:43]। তাদের দৃষ্টি নিজেদের দিকে দৃষ্টি যাবে না। আর তাদের আফীদা/ মস্তিষ্ক গুলো হবে শূন্য/ স্মৃতি হীন।
# আয়িশাহ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল (সা) বলেছেন- “মানুষকে যখন একত্রিত মহাবিশ্বে উত্থিত করা হবে, তখন তারা খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায় থাকবে”। আয়িশাহ (রা) বলেন, আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসূল, তখন তো পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তিনি বললেন- “এমন ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা” (বুখারী, হাদীশ 5627)
কিয়ামতের পূর্বে সীমালঙ্ঘনকারীদের আফসোস।
14:44 নং আয়াহ : সুতরাং আপনি মানবজাতিকে সতর্ক করে দিন। যেদিন তাদের উপর আযাব/ শাস্তি আসবে, সেদিন জ্বালিম/ সীমালঙ্ঘনকারীরা বলবে- “হে আমাদের প্রভু, আমাদেরকে কিছুকাল অবকাশ দিন। তাহলে আমরা আপনার ডাকে সাড়া দেব [63:10-11] এবং রাসূলদেরকে অনুসরণ করব” [25:27, 33:66]। (তখন তাদেরকে বলা হবে) “ইতিপূর্বে তোমরা কি শপথ করে বল নি যে, তোমাদের কোনও পতন নেই (তাহলে আজ অবকাশ চাইছ কেন)??
আরব ভূমিতে একসময় বনজঙ্গল, নদনদী ও মানব সভ্যতা ছিল।
14:45 নং আয়াহ : “এবং (এও বলা হবে) তোমরা তাদের বাসভূমিতে (১) বসবাস করছিলে, যারা নিজেদের অত্যাচার (২) উপর করেছিল। এবং তোমাদের কাছে এটা স্পষ্ট ছিল যে, তাদের সঙ্গে আমরা কেমন আচরণ করেছিলাম। আমরা তোমাদের জন্যেই (সেই সমস্ত) উদাহরণ (কুর’আনে) পেশ করেছিলাম।
১) ‛তাদের বাসভূমিতে’ বলতে, কাদের বাসভূমির কথা বলা হচ্ছে?? আজ আজ থেকে 50 হাজার বছর আগে থেকে শুরু করে 10-12 হাজার আগে পর্যন্ত আরব ভূমি বনজঙ্গল, নদনদী ও মানব সভ্যতার ধারক বাহক ছিল। কোনও কারণে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির পরিবর্তনের জন্য আরব ভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়। তারপর ধীরে ধীরে মানব জাতি পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।
সৌদি আরব ও তার আশেপাশে বেশ কিছু খননকার্য চালান হয়েছিল। যাতে দেখা যায় যে, 8-10 বা 10-12 হাজার বছর আগে সৌদি আরবে প্রাচীন সভ্যতা বিরাজ করছিল। পাওয়া গেছে দেবদেবী বিহীন উপাসনালয় থেকে শুরু করে দেবদেবীদের উপাসনালয়। এখানে সেটাই বলা হচ্ছে যে, তারা (মূর্তি পূজারীরা) নিজেদের উপর অত্যাচার করেছিল এবং তারা রাসূলদের বিরুদ্ধে মারাত্মক চক্রান্ত করেছিল (14:46)। আর যখনই মানুষ ঢালাও ভাবে শিরক করতে শুরু করে, তখন ধংস অনিবার্য (30:42)। যাইহোক, পুনরায় আরব ভূমি বনজঙ্গল, নদনদী ও চাষাবাদ শুরু হবে (মুসলিম, হাদীশ 157)। বিস্তারিত জানতে 14:37 দেখে আসুন।
২) ‛নিজেদের উপর অত্যাচার’ বলতে?? এটা আরবি বাক রীতি। যার অর্থ- “তারা এমন কর্ম করেছিল, যার কারণে তাদের উপর শাস্তি বরাদ্দ হয়েছিল/ হবে”।
একদিন পাহাড় পর্বত সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।
14:46 নং আয়াহ : এবং নিশ্চয়ই তারা (নাবী রাসূলদের বিরুদ্ধে) মারাত্মক চক্রান্ত/ পরিকল্পনা করেছিল। যদিও তাদের চক্রান্ত/ পরিকল্পনার জবাব আল্লাহর কাছে ছিল [3:54, 52:42]। তবে তাদের চক্রান্ত/ পরিকল্পনা এতটা গুরুতর ছিল না যে, যা দ্বারা পাহাড় পর্বত [38:18] সরে যেত।
# এরমানে হল- গুরুতর/ দৃঢ় সংকল্প সহ পরিকল্পনা করলে পাহাড় পর্বত পর্যন্ত সরিয়ে দেওয়া সম্ভব। দাউদ (আ) এর যুগে এই প্রযুক্তি ছিল।
আল্লাহ তার বান্দাদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেবেন।
14:47 নং আয়াহ : এতএব আপনি কখনই ভাববেন না যে, আল্লাহ তার রাসূলদের সঙ্গে কৃত ওয়াদা খেলাপ করবেন [22:15, 37:171-173]। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিশালী ও তার বান্দাদের পক্ষ থেকে ইনতিকাম/ প্রতিশোধ গ্ৰহণকারী।
পৃথিবী একদিন মঙ্গল গ্ৰহের মত জীবনহীন হয়ে যাবে।
14:48 নং আয়াহ : সেদিন পৃথিবী অন্য গ্ৰহের মত হয়ে যাবে, বদলে যাবে বায়ুমণ্ডলের স্তর গুলোও। সত্য প্রমাণিত হবে আল্লাহর আয়াত গুলো [41:43]। যিনি সর্বদা একক এবং মহা শক্তিশালী।
# অন্য গ্ৰহের মত বলতে, মঙ্গল/ শুক্র গ্ৰহের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। কেননা, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য যাচাইয়ের পর এটা সুস্পষ্ট যে, মঙ্গল/ শুক্র গ্ৰহ একদিন পৃথিবীর মতো জীবনময় ছিল।
অপরাধীদের হাত পা শিকলে বাঁধা থাকবে।
14:49 নং আয়াহ : এবং সেদিন আপনি দেখতে পাবেন- “মুজরিম/ অপরাধীদের হাত পা শিকল সমূহে কঠোরভাবে বাঁধা রয়েছে [69:32, 104:9]।
প্লাস্টিকের জামাকাপড় তৈরির ভবিষ্যৎ বাণী।
14:50 নং আয়াহ : তাদের জামাকাপড় হবে দাহ্য তরল পদার্থ (পেট্রোপণ্য) থেকে তৈরি। এবং তাদের মুখ সমূহকে ছেয়ে ফেলবে আগুন” [23:104, 4:56]।
জাহান্নাম কেন জরুরি??
14:51 নং আয়াহ : এটা এজন্য যে, যেন আল্লাহ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার (ইহজীবনের) অর্জন দ্বারা প্রতিদান/ শাস্তি দিতে পারেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্ৰহণে দ্রুত।
কুরআন নাযিলের অন্যতম উদেশ্য একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা।
14:52 নং আয়াহ : এটা (কুরআন) মানব জাতির জন্য বার্তা [2:185, 81:27]। যেন তা দিয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়। এবং যেন তারা (মানবজাতি) জেনে যায় যে, তাদের ইলাহা/ ঈশ্বর শুধুমাত্র একজন [37:35, 21:22, 23:91]। আর তারাই পরামর্শ গ্ৰহণ করে, যারা বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন।
ভাই যদি এটা অ্যাপস আকারে একত্রে পাওয়া যেত আমরা উপকৃত হতাম।বাংলাদেশ থেকে।