বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
অর্থ- আল্লাহর নাম নিয়ে পড়া শুরু করছি, যিনি সীমাহীন দয়ালু এবং সীমাহীন করুণাময়।
নাযিল : মাক্কাহ, আয়াত : 43 টি।
বিচ্ছিন্ন অক্ষর গুলো আসলে কি??
13:1 নং আয়াহ : আলিফ লাম র। ঐ গুলো কিতাব/ কুরআনের আয়াত [15:1, 31:1-2]। এবং যা কিছু আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে, তা সত্য। কিন্তু মানব জাতির মধ্যে অনেক মানুষই সত্য স্বীকার করে না [23:70]।
মহাবিশ্ব, আরশ ও সৌরজগৎ।
13:2 নং আয়াহ : আল্লাহ (হলেন তিনি), যিনি মহাবিশ্বকে অকল্পনীয় বড় আকৃতি [51:47, 81:15] দিয়েছেন, কোনও খুঁটি/ স্তম্ভ/ বাইরের সাহায্য [18:51] ছাড়াই, যা তোমরা (ভবিষ্যতে) দেখতে (১) পারবে। তারপর তিনি আরশ/ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হাতে নেন। আর তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে তোমাদের নিয়ন্ত্রণাধীন করে দেবেন। তারপর প্রত্যেকেই নিদির্ষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুরতে থাকবে [39:5]। এগুলো তার নির্ধারিত ব্যবস্থা [36:38]। তিনি বহু/ ব্যাপক অর্থবোধক ভাবে [3:7] আয়াত সমূহ বর্ণনা করছেন। যাতে তোমরা তোমাদের প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্পর্কে ইয়াকীন/ দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে পার [84:1-6]।
১) ভাবতে পারেন যে, এটা 1500 আগের ভবিষ্যৎ বাণী! ভবিষ্যতে মানুষ বিজ্ঞানে অকল্পনীয় উন্নতি সাধন করবে, এখানে পরোক্ষভাবে সেই ভবিষ্যৎ বাণী করা হচ্ছে। আজ আমরা উন্নত থেকে উন্নত মানের দূরবীন দ্বারা মহাবিশ্ব দেখতে পারছি, কিন্তু কোনও ধরণের খুঁটি/ স্তম্ভ দেখতে পাচ্ছি না [41:53]। অথচ বাইবেল বলে- “স্তম্ভের উপর আকাশ/ মহাবিশ্ব টিকে আছে” (Book of Job, 26:11)। এমনকি বাইবেলে এও বলা হয়েছে- “পৃথিবীও স্তম্ভের উপর টিকে আছে” (Book of Psalms, 104:5)। তবুও কেউ কেউ বলেন- “পবিত্র কুরআন নাকি বাইবেল থেকে কপি করা হয়েছে”।
পর্বতমালা, নদনদী ও পৃথিবীতে দিন রাত সৃষ্টি।
13:3 নং আয়াহ : আর আল্লাহ (হলেন তিনি), যিনি প্লেট গুলোকে সঞ্চালিত করেন। আর এর মাধ্যমেই তিনি (পৃথিবীতে) উত্থিত করেন পর্বতমালা সমূহ [27:88]। আর (পর্বত মালা সমূহ থেকে) প্রবাহিত করেন নদনদী। এবং বহু ফল সৃষ্টি করেছেন দুই ধরণের, আর তা বিপরীত ধর্মী গুণ ও বৈশিষ্ট্য সহ। তিনিই (সূর্যকে পৃথিবীর ঘূর্ণন দ্বারা) ঢেকে দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাত ও দিন নিয়ে আসেন [78:10]। নিশ্চয়ই ঐ সমস্ত (বর্ণনাকৃত) বিষয়ের মধ্যে তাদের জন্য নিদর্শন সমূহ রয়েছে, যারা চিন্তা ভাবনা/ গবেষণাকারী সম্প্রদায় [8:22, 10:100]।
পৃথিবীতে রয়েছে পাশাপাশি প্লেট সমূহ।
23:4 নং আয়াহ : এবং পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন (প্রায় 100 টি ছোট বড়) প্লেট সমূহ। এবং (তার উপর) রয়েছে আঙ্গুরের বাগান সমূহ, শস্যক্ষেত ও খেঁজুর গাছ সমূহ। যা এক ও একাধিক শির বিশিষ্ট। যাতে সেচ দেওয়া হয় উৎকৃষ্ট ও একই পানি দ্বারা। কিন্তু স্বাদের দিক থেকে এককে অন্যের উপর মর্যাদা দিই। নিশ্চয়ই ঐ সমস্ত (বর্ণনাকৃত) বিষয়ের মধ্যে রয়েছে তাদের রয়েছে নিদর্শন সমূহ, যারা আকাল/ মস্তিষ্কের ব্যবহার করে [8:22, 10:100]।
পুনরুত্থান সম্পর্কে কাফিরদের বিস্ময়কর কথা ও প্রশ্ন।
13:5 নং আয়াহ : আর যদি আপনি অবাক হন (তাহলে এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই)। তাদের এই কথাটাই বিস্ময়কর যে, “যখন আমরা গ্ৰহের/ উপগ্ৰহের পদার্থের সঙ্গে মিশে যাব, তখন কি আবারও নতুন ভাবে সৃষ্টি হব”[36:78-79, 37:16-18]?? ওরাই তারা, যারা তাদের প্রভুকে অস্বীকার করেছে। তাদের গলায় শিকল থাকবে [69:32]। এবং তারাই হবে আগুনের (জাহান্নামের) অধিবাসী। এবং তারা তার মধ্যে অনন্তকাল থাকবে [4:56, 87:13]।
মানব জাতির সীমালঙ্ঘন সত্ত্বেও আল্লাহ ক্ষমাশীল।
13:6 নং আয়াহ : তারা কি কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণের জন্য তাড়াহুড়ো করছে [17:11]?? অবশ্যই পূর্ববর্তীদের উদাহরণ রয়েছে, যারা এদের পূর্বে গত/ ধ্বংস হয়েছে (সুতরাং তাড়াহুড়ো কর না)। নিশ্চয়ই আপনার প্রভু মানব জাতির প্রতি ক্ষমাশীল [2:143], তাদের সীমালঙ্ঘন সত্ত্বেও। তবে (এও সত্য) নিশ্চয়ই আপনার প্রভু শাস্তিদানে কঠোর [5:98]।
প্রত্যেক জাতির জন্য পথপ্রদর্শক ছিল।
13:7 নং আয়াহ : আর যারা হয়েছে কাফির/ সত্য অস্বীকার কারী, তারা বলে- “তার (মুহাম্মাদের) কাছে তার প্রভুর পক্ষ থেকে কোনও নিদর্শন আসে নি কেন” [21:37, 29:50-51]?? প্রকৃত পক্ষে আপনি শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী [22:49, 53:56]। প্রত্যেক কাওম/ জাতির জন্য হাদি/ পথপ্রদর্শক ছিল [10:47, 35:24]।
আল্লাহর কাছে রয়েছে প্রত্যেক পদার্থের ধর্ম নির্ধারণকারী ব্যবস্থা।
13:8 নং আয়াহ : আল্লাহ জানেন- যা নারীরা তাদের গর্ভে (মূমীন/ কাফির) ধারণ করে [31:34]। আর জরায়ু থেকে বের হয়ে (গর্ভপাত) যায়, আর যা (ভ্রুণ) জরায়ুতে বৃদ্ধি পায়। কেননা, তার কাছেই প্রত্যেক পদার্থের ধর্ম/ আইন সম্বলিত ব্যবস্থা [25:2, 7:54] ।
আল্লাহ জ্ঞানে গুণে শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদায় সুউচ্চ।
13:9 নং আয়াহ : তিনি সমস্ত অদৃশ্য ও দৃশ্যের জ্ঞান রাখেন। তিনি (জ্ঞানে গুণে) শ্রেষ্ঠ ও (মর্যাদায়) সুউচ্চ।
আল্লাহর কাছে কিছুই গোপন নেই/ থাকবে না।
13:10 নং আয়াহ : তোমাদের মধ্যে যে কোনও কথা গোপন করে ও যে প্রকাশ করে [50:16] এবং যে রাতে আত্মগোপন করে ও যে দিনে বিচরণ করে, তার (আল্লাহর) জন্য সবই সমান [10:61]।
পরিবর্তন এমনি এমনি আসে না, পরিবর্তনের ইচ্ছা থাকা চাই।
13:11 নং আয়াহ : তার জন্য রয়েছে একের পর এক (তথ্য/ ডেট) রক্ষনাবেক্ষনকারী [82:10-12], যা তার বর্তমান ও অতীতের রক্ষা করে [50:17-18] আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক [83:7-9, 83:18-20]। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনও জাতির অবস্থা নিজে থেকে পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করতে চায় [53:39]। এবং যখন আল্লাহ ইরাদা/ ইচ্ছা করেন কোনও জাতিকে ধ্বংস করতে, তখন তা আঁটকে দেওয়ার কেউ নেই। আর আল্লাহ ছাড়া তাদের জান্য কোনও ওলী/ অভিভাবক নেই [41:31]।
মেঘের বিদ্যুৎ কিভাবে তৈরি হয়??
13:12 নং আয়াহ : তিনিই (হলেন আল্লাহ), যিনি তোমাদেরকে দেখান বিদ্যুৎ ঝলকানি, যা ভয় ও আশার (১) সঞ্চার করে। এজন্য তিনিই একত্রিত/ সৃষ্টি করেন মেঘ, যা পানি/ বরফের কণা (২)।
১) প্রশ্ন হবে- “কিসের ভয়, কিসের আশা”?? মৃত্যুর ভয়, মাটির উর্বরতার আশা। মানে?? মানেট খুব সহজ। বজ্রপাত হলে মাটি Nitrogen (নাইট্রোজেন) সমৃদ্ধ হয়, ফলে চাষাবাদ খুব ভালো হয়।
২) আসলে পানি/ সমুদ্রের পানি গরম হয়ে বাষ্প আকারে উপরে ওঠে। তারপর শীতল হতে থাকে। পরে তা বরফের ছোট্ট ছোট্ট কণায় পরিণত হয়। তারপর বরফের কণাতে কণাতে ঘর্ষণের ফলে তৈরি হয় মেঘের বিদ্যুৎ। যা উচ্চ ভোল্ট হওয়ার কারণে বাতাসের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসে। যা বজ্রপাত নামে পরিচিত।
ঘেঘ ডাকা মূলত বজ্রপাতের জন্য সৃষ্ট শব্দ।
13:13 নং আয়াহ : বজ্রও তার (আল্লাহর) ভয়ে তার পবিত্রতা বর্ণনা করে প্রশংসা সহ এবং ফেরেস্তারাও [17:44]। এবং তিনি বিদ্যুৎ/ বজ্র প্রেরণ করেন, যে কারণে তীব্র শব্দের সৃষ্টি হয়। অতঃপর তা (বজ্র) দিয়ে যাকে চান, তাকে আঘাত করেন। তবুও তারা আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে তর্কবিতর্ক করে। অথচ তিনি শক্তিতে প্রবল ও শাস্তিতে কঠোর।
# বজ্র সম্পর্কে একটি হাদীশ রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে, বজ্রপাতের শব্দ মূলত ফেরেস্তাদের হাঁকডাক, যা দ্বারা তারা মেঘমালাকে একত্রিত করে (তিরমিযী, হাদীশ 3117)। হাদীশটা সরাসরি এই আয়াহর বিরুদ্ধে চলে গেল। মানে, হাদীশটি ‛শায’ (কুরআন বিরোধী) এখানে বলা হয়েছে- “শব্দের সৃষ্টি হয় বজ্রপাতের জন্য”। বিজ্ঞানও তাই বলে যে, উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ বাতাসের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে নেমে আসে, যাকে বজ্রপাত বলা হয়। ফলে বাতাসে তরঙ্গের সৃষ্টি হয়। যে কারণে শব্দ সৃষ্টি হয়। যা মেঘ ডাকা নামেও পরিচিত। তা না মেঘের ডাক, আর না ফেরেস্তাদের।
যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে ভিন্ন কাউকে ডাকে, তাদের উদাহরণ।
13:14 নং আয়াহ : সত্যের আহ্বান শুধু তার (আল্লাহর) দিকেই [16:125]। যারা তাকে বাদ দিয়ে ভিন্ন কাউকে ডাকে, তারা তাদের ডাকে সাড়া দিতে পারে না [46:4-5]। (তাদের উদাহরণ হল, তার মতো) কেউ দুহাত পানির দিকে বাড়িয়ে দেয়, যেন পানি তার মুখে আসে। কিন্তু পানি তার কাছে কখনও পৌঁছাবে না। কাফির/ সত্য অস্বীকারকারীদের ডাক ভ্রান্তি ছাড়া কিছুই নয়।
মহাবিশ্বের সমস্ত কিছু আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত।
13:15 নং আয়াহ : কেননা, মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর সমস্ত কিছু আল্লাহকে সিজদা করে (নির্দেশ পালনে রত) ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় [3:83, 22:18]। এবং (আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে, যারা তর্কবিতর্ক করে, তাদের) ছায়া গুলোও আল্লাহকে সিজদা করে) সকাল ও বিকেলে [16:48-49]।
❤️ সিজদাহর আয়াহ ❤️।
আল্লাহর অস্তিত্ব ও ইসলামের সত্যতা সুস্পষ্টকারী কিছু প্রশ্ন।
13:16 নং আয়াহ : বলুন- “কে মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর প্রভু/ মালিক?? বলুন- “আল্লাহ”। বলুন- “তারপরও কি তোমরা তাকে (আল্লাহকে) বাদ দিয়ে অন্যকে আউলিয়া/ অভিভাবক হিসাবে গ্ৰহণ করবে?? যদিও তারা (অন্যান্যা অভিভাবকগণ) নিজেদের উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে না”। বলুন- “অন্ধ সাজা ব্যক্তি ও সুদৃষ্টিবান ব্যক্তি কি সমান?? অন্ধকার ও আলো কি সমান [35:19-20]”?? তবে কি তারা আল্লাহর বিপক্ষে তাদের শরিকদের দাঁড় করিয়েছে?? তারা কি কিছু সৃষ্টি করেছে [46:4], যেমন তিনি (আল্লাহ) সৃষ্টি করেছেন [25:3, 16:20-21], যে কারণে তাদের (উপাসকদের) কাছে সৃষ্টির বিষয়টি বিভ্রান্ত করেছে?? বলুন- “সমস্ত কিছু আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি পরম একক ও প্রবলভাবে অপ্রতিরোধ্য” [38:65]।
শিরক ও কুফরীর বিরুদ্ধে একটি সুন্দর উদাহরণ।
13:17 নং আয়াহ : তিনি বায়ুমণ্ডল থেকে বৃষ্টি নামান। ফলে নদীনালা/ নদনদী গুলো প্লাবিত হয় (বৃষ্টির) পরিমাণ অনুযায়ি। অতঃপর প্লাবন আবর্জনা (শুকনো পাতা জাতীয় বস্তু) সমূহকে উপরে নিয়ে আসে এবং বহন করে [22:31]। যেমন তারা যখন অলংকার ও বাসনপত্র তৈরির জন্য আগুনে (ধাতুকে) উত্তপ্ত করে, তখন আবর্জনা উপরে উঠে আসে। আল্লাহ এভাবেই উদাহরণ দ্বারা সত্য ও মিথ্যার বর্ণনা করে থাকেন [14:18]। অতঃপর যা আবর্জনা, তা (নদনদী) বয়ে নিয়ে চলে যায়। আর যতটা (ভূগর্ভস্থ পানি) মানুষের জন্য উপকারী, তা পৃথিবীর ভিতরে চলে যায়। আল্লাহ এভাবেও উদাহরণ সমূহ পেশ করে থাকেন [24:39-40]।
ইসলাম অস্বীকারকারীর পরবর্তী জীবনের পরিণতি।
13:18 নং আয়াহ : যারা সাড়া দেয় তাদের প্রভুর ডাকে, তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ। আর যারা সাড়া দেয় না, তারা যদি নিজেদের মুক্তিপণ হিসাবে পৃথিবীর সমস্ত কিছু ও তার সম পরিমাণও [3:91] দেয় (তা গ্ৰহণ করা হবে না)। তাদের জন্য থাকবে কঠোর হিসাব। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম। আর তা নিকৃষ্ট আবাস [98:6]।
অন্ধের মতো কুরআন মান্য/ অমান্য করা উচিৎ নয়।
13:19 নং আয়াহ : তবে কি যে ব্যক্তি জানে আপনার কাছে আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে যা নাযিল হয়েছে, তা সত্য। সে কি তার মতো যে অন্ধ সাজে [6:115]?? মূলত তারাই (কুরআন নিয়ে) বিচার বিবেচনা করে, যারা বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন [38:29, 47:24]।
আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার/ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হারাম।
13:20 নং আয়াহ : (মূলত তারাই বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন) যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদা/ মানত পূর্ণ করে [22:29, 76:7] এবং অঙ্গীকার/ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না [17:34]।
আত্মীয়তার ‛সম্পর্ক’ ছিন্ন করা হারাম।
13:21 নং আয়াহ : (মূলত তারাই বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন) যারা অক্ষুন্ন রাখে, আল্লাহ যে সমস্ত ‛সম্পর্ক’ অক্ষুন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন [13:25]। এবং ভয় করে তাদের প্রভুকে। আর ভয় করে তাদের অসৎকর্ম গুলোর হিসাবকে।
# গুরুত্বপূর্ণ হাদীশ- “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না” (বুখারী, হাদীশ 5984)।
নিকৃষ্টকে উৎকৃষ্ট দ্বারা প্রতিরোধ করতে হবে।
23:22 নং আয়াহ : আর (মূলত তারাই বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন) যারা তাদের প্রভুর মুখমণ্ডল/ সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য স্ববর/ ধৈর্য্য ধারণ করে এবং স্বালাত/ আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করে। আর তাদেরকে রিযিক হিসাবে যা দেওয়া হয়েছে, তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে দান করে এবং নিকৃষ্টকে উৎকৃষ্ট দ্বারা প্রতিরোধ করে [41:34]। তাদের জন্য রয়েছে পরবর্তী জীবনের ঘর।
জান্নাতীদেরকে ফেরেস্তারা সকাল সন্ধ্যায় সালাম দেবেন।
13:23 নং আয়াহ : তা হল অনন্তকাল স্থায়ী জান্নাত। তারা তাতে প্রবেশ করবে। (সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে) যে সৎকর্ম করেছে তাদের পূর্বপুরুষদের মধ্য হতে, তাদের জীবন সঙ্গী/ সঙ্গিনী হতে এবং তাদের সন্তান সন্ততিদের মধ্যে হতেও [40:8]। আর ফেরেস্তারা (জান্নাতের) প্রত্যেক দরজা [38:50] দিয়ে তাদের কাছে (সালাম দিতে) প্রবেশ করবে [56:26]।
13:24 নং আয়াহ : “(এবং বলবে) ‘সালামুন আলাইকুম’/ তোমাদের প্রতি সালাম [16:32, 39:73]। একারণে যে, তোমরা স্ববর/ ধৈর্য্য ধারণ করেছ। এতএব কতই উত্তম পরবর্তী জীবনের ঘর (জান্নাত)”।
# ফেরেস্তারা কি ‛সালামুন আলাইকুম’ শব্দ দুটি উচ্চারণ করবে?? না, ফেরেস্তারা ‛সালামুন আলাইকুম’/ ‛তোমাদের প্রতি সালাম’ বলবে। কিন্তু উচ্চারণ এভাবে করবে না।এখানে পবিত্র কুরআন তথ্য প্রদান করছে। এটাকে আরবি ব্যাকারণের পরিভাষায় বলা ‛খবর’। মানে, ফেরেস্তারা কি বলবে, সেটা বলা হচ্ছে। কিভাবে বলবে, সেটা বলা হচ্ছে না। বরং ফেরেস্তারা বলবে- ‛আসসলামু আলাইকুম’। এর অর্থ- ‛তোমাদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি বর্ষিত হোক’।
উদাহরণ দিই! ধরুন, আমি আমার ছেলেকে বললাম- “এখুনি আমার কাছে A নামের ব্যক্তি আসবে, এলেই তুই তাকে গালাগালি দিবি”। তারপর আমার কাছে A নামের ব্যক্তিটি এল। আমার ছেলে বলে উঠল- “গালাগালি, গালাগালি, গালাগালি”। এবার বলুন তো, এটা কি বুদ্ধিমানের মতো কাজ হল?? না, এটা বোকার মতো কাজ। তার বলা উচিৎ ছিল- “শুয়োরের বাচ্চা, কুকুরের বাচ্চা”। এটা হল গালাগালি দেওয়া।
ঠিক তেমনই। ‛সালামুন আলাইকুম’ উচ্চারণ করা খুবই বোকার মতো কাজ। এটা তথ্য বা খবর। ফেরেস্তারা এটা উচ্চারণ করবে না। বরং তারা এভাবে বলবে- “আসসালামু আলাইকুম”। হাদীশ অস্বীকারকারীগণ এখানে ‛আমার ছেলের’ মতোই বোকামি করে চলেছে।
সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হারাম।
13:25 নং আয়াহ : আর যারা আল্লাহর সঙ্গে ওয়াদা দৃঢ় করার পর ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ যে সব সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তা ছিন্ন করে [13:21] এবং গ্ৰহে/ উপগ্রহে সন্ত্রাস [7:56] সৃষ্টি করে [28:83], তাদের জন্য থাকবে লানত/ লাঞ্ছনা [2:261]। আর তাদের জন্য থাকবে নিকৃষ্ট ঘর/ জাহান্নাম [98:6]।
পরবর্তী জীবনের তুলনায় ইহজীবন কিছুই নয়।
13:26 নং আয়াহ : আল্লাহ চাইলে যে কারোর রিযিক প্রশস্ত করে দিতে পারেন, আবার সংকীর্ণ করে দিতেও পারেন। তারা ইহজীবন নিয়ে উচ্ছ্বাসিত/ খুশি কিন্তু [77:46] পরবর্তী জীবনের তুলনায় ইহজীবন সামান্য ভোগের সামগ্রী ছাড়া অন্য কিছুই নয় [87:16-17, 6:32]।
আল্লাহ কাকে পথ দেখাবেন??
13:27 নং আয়াহ : যারা সত্য অস্বীকার করেছে, তারা বলে- “কেন তার (মুহাম্মাদের) প্রতি তার প্রভুর পক্ষ থেকে নিদর্শন আসে না [29:50-51]?? বলুন- “আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করে দেন [2:26]। তবে তাকে পথ দেখান, যে তার (আল্লাহর) দিকে মুখ ফেরায় [42:13]”।
আল্লাহর প্রেরিত জ্ঞান/ বিধান দ্বারাই মস্তিষ্ক প্রশান্তি লাভ করে।
13:28 নং আয়াহ : যারা সত্য স্বীকার করেছে, তাদের মস্তিষ্ক সমূহ আল্লাহর প্রেরিত জ্ঞান (কুরআন) দ্বারাই সন্তুষ্ট/ প্রশান্ত হয় [38:1]। জেনে রেখ- “আল্লাহর প্রেরিত জ্ঞান দ্বারাই মস্তিষ্ক সমূহ সন্তুষ্ট/ প্রশান্ত হতে পারে”।
ভিন্ন অনুবাদ : যারা সত্য স্বীকার করেছে, তাদের মস্তিষ্ক সমূহ আল্লাহর বিধান মেনে চলার মাধ্যমে মানসিক শান্তি লাভ করে [17:9, 34:6]। জেনে রেখ- “আল্লাহর বিধান মেনে চলার মাধ্যমেই মস্তিষ্ক সমূহ মানসিক ভাবে প্রশান্ত হতে পারে”।
ইমান/ সত্য স্বীকার ও সৎকর্মের পরিণতি।
13:29 নং আয়াহ : যারা সত্য স্বীকার করে এবং সৎকর্ম করে, তাদের জন্য থাকবে [22:50, 18:107] কল্যাণ ও উত্তম পরিণতি।
নাবী (সা) কে আরবেই কেন পাঠান হয়েছিল??
13:30 নং আয়াহ : এভাবেই আমরা আপনাকে এমন জাতির কাছে প্রেরণ করেছি, অবশ্যই যাদের পূর্বে বহু জাতি/ যুগ অতীত হয়েছে [32:3, 36:6]। যাতে আপনি আপনার কাছে প্রেরণ করা ওহী তাদেরকে পাঠ করে শোনান [62:2]। তবে, যদি তারা দয়াময়কে অস্বীকার করে, তাহলে আপনি বলুন- “তিনি আমার প্রভু, যিনি ছাড়া কোনও ঈশ্বর/ উপাস্য নেই [21:22, 23:91]। আমি তার উপর নির্ভর করি [14:11-12], তার দিকেই ফিরে যেতে হবে” [13:36]।
কুরআন দ্বারা কোনও অলৌকিক কাজ করা সম্ভব নয়।
13:31 নং আয়াহ : আর যদি এমন হোত যে, কুরআন দ্বারা পাহাড়কে সরিয়ে দেওয়া যেত কিংবা যদি তা দ্বারা পৃথিবীকে টুকরো টুকরো করা যেত কিংবা যদি তা দ্বারা মৃতদের সঙ্গে কথা বলা যেত, তবুও তারা সত্য স্বীকার করবে না। বরং ঐ সমস্ত নিদর্শন আল্লাহর অধীন [13:38]। তবে যারা সত্য স্বীকার করেছে, তারা কি জানে না যে, আল্লাহ চাইলে গোটা মানব জাতিকে (জোর জবরদস্তি) পথ দেখাতে পারতেন [11:118, 26:4]?? তবে যারা সত্য অস্বীকার করেছে, এ কারণে তাদের উপর কিংবা তাদের ঘরবাড়ির আশেপাশে বিপদ/ বিপর্যয় আপতিত হতেই থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর ওয়াদা সত্যে পরিণত হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না [3:9]।
# কুরআন নিজেই অলৌকিক, তবে তা দ্বারা কোনও অলৌকিক ঘটনা ঘটান সম্ভব নয়। একটি হাদীশ দেখাই, তাহলে বুঝতে পারবেন- “প্রত্যেক নাবীকে তার যুগের প্রয়োজন মুতাবিক মুজেজা/ অলৌকিক নিদর্শন দেওয়া হয়, যা দেখে মানুষজন সত্য স্বীকার করেছিল। কিন্তু আমাকে মুজেজা/ অলৌকিক নিদর্শন হিসাবে দেওয়া হয়েছে ওহী (ওহীর সবচেয়ে বড় অংশ হল- কুরআন)। আমি আশা করি, কিয়ামতের দিন আমার অনুসারীর সংখ্যা হবে সর্বাধিক”(বুখারী, হাদীশ 4981)।
সমস্ত নাবী/ রাসূলদেরকে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা হয়েছে।
13:32 নং আয়াহ : আর অবশ্যই আপনার পূর্বের রাসূলদেরকে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করা হয়েছে [15:11, 43:7]। সত্য অস্বীকারকারী দরকে অবকাশ [15:4, 22:48] দিয়েছি, তারপর তাদেরকে ধরেছি (১)। অতঃপর দেখুন- “কেমন ছিল আমার শাস্তি”।
১) এখানে ‛ধরেছি’ বলতে, হাত দিয়ে ধরা নয়। এটা আরবি বাক রীতি। যার অর্থ- “তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি”।
কাফিরদের জীবন যাপন গুরুত্বহীন।
13:33 নং আয়াহ : তবে কি যিনি প্রত্যেক বুদ্ধিমান জীবের সেই অর্জন রক্ষাকারী [83:7-9, 83:18-21], যা সে অর্জন করেছ, (তিনি কি মিথ্যা ঈশ্বরদের মতো)?? অথচ তারা আল্লাহর বিপক্ষে শরিক দাঁড় করায়। বলুন- “তাদের (স্রষ্টা হিসাবে) নাম/ পরিচয়/ বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর [46:4]। অথবা তোমরা কি তাকে (আল্লাহকে) গ্ৰহের/ উপগ্রহের এমন বিষয় জানাতে চাইছ, যা তিনি জানেন না [10:18, 10:61]?? নাকি তোমরা শুধু ফালতু বিষয়ে কথা বলতে চাইছ”?? বরং (সত্য হল) যারা সত্য অস্বীকার করেছে, তাদের নিকট তাদের চক্রান্ত/ ষড়যন্ত্রকে সৌন্দর্য্য মণ্ডিত/ করা হয়েছে [6:123] এবং তাদের পথ/ জীবন যাপন গুরুত্বহীন। আর আল্লাহ যাকে চান, তাকে পথভ্রষ্ট করেন [2:26], (যাকে পথভ্রষ্ট করেন) তার জন্য আর কোনও পথপ্রদর্শক নেই [18:17]।
পরবর্তী জীবনে কাফিরদের বাঁচার উপায় নেই।
13:34 নং আয়াহ : তাদের জন্য থাকবে ইহজীবনে আযাব/ শাস্তি এবং পরবর্তী জীবনে থাকবে আরও কঠোর শাস্তি। আর আল্লাহ হতে তাদেরকে কেউ রক্ষা করার মতো থাকবে না [29:22, 41:31]।
জান্নাত তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য।
13:35 নং আয়াহ : জান্নাতের পরিচয় (দিলাম), যে বিষয়ে মুত্তাকী (অপকর্ম থেকে দূরত্ব অবলম্বনকারী) দের ওয়াদা করা হয়েছে- তার নিয়ন্ত্রণাধীনে প্রবাহিত হবে নদনদী। যার (জান্নাতের) খাদ্য কখনও শেষ হবে না [56:32-33], ছায়া হবে শান্ত (১)। ঐ সমস্ত পরিণতি তাদের জন্য, যারা আল্লাহর জন্য তাকওয়া (অপকর্ম থেকে দূরত্ব) অবলম্বন করে। আর কাফির/ সত্য অস্বীকারকারীদের পরিণতি হবে আগুন।
ইহুদী ও খৃষ্টানদের মধ্যে অনেকেই কুরআনে সন্তুষ্ট।
13:36 নং আয়াহ : আর আমরা যাদেরকে পূর্বে কিতাব দিয়েছি, তারা আনন্দিত হয় তাতে, যা আপনার কাছে নাযিল করা হয়েছে [3:113, 3:199]। তবে তাদের মধ্যে কোনও কোনও দল তার (কুরআনের) কোনও কোনও অংশ ইনকার/ অস্বীকার করে। বলুন- “আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, আমি যেন আল্লাহর ইবাদত/ উপাসনা করি, তার সঙ্গে কোনও কিছুকে শরিক না করি এবং যেন শুধু তাকেই ডাকি। তার দিকেই ফিরে যেতে হবে [13:30]।
ইহুদী ও খৃষ্টানদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করা হারাম।
13:37 নং আয়াহ : এবং এভাবেই আমরা নাযিল করেছি তাকে (কুরআনকে) আরবিতে। যদি আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরও তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ [2:120] করেন, তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে আপনার জন্য কোনও ওলী/ অভিভাবক পাবেন না, আর না পাবেন রক্ষাকারী।
প্রত্যেক অঞ্চল/ যুগের জন্য নির্ধারিত কিতাব ছিল।
13:38 নং আয়াহ : আর অবশ্যই আমরা আপনার পূর্বে বহু রাসূল প্রেরণ করেছি। তাদেরকে স্ত্রী/ সঙ্গীনি এবং সন্তানসন্ততিও প্রদান করেছি। এবং (জেনে রাখুন) কোনও রাসূলের দ্বারাই আল্লাহর অনুমতি ছাড়া নিদর্শন নিয়ে আসা সম্ভব ছিল না (আপনার দ্বারাও সম্ভব নয়)। তবে (নিদর্শন স্বরূপ) প্রত্যেক অঞ্চল/ যুগের জন্য নির্ধারিত (১) কিতাব ছিল [10:47]।
১) উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে ঈশা (আ) এর কাছে নাযিলকৃত কিতাব ইঞ্জিলের। ইঞ্জিল নাযিল হয়েছিল ইহুদীদের জন্য, নিদির্ষ্ট কালের জন্য। নিদির্ষ্ট কাল এজন্য যে, ঈশা (আ) নিজেই বলেছিলেন- “I still have many things to say to you, but you cannot bear them now. However, when He, the Spirit of truth, has come, He will guide you into all truth; for He will not speak on His own authority, but whatever He hears He will speak; and He will tell you things to come (Jhon, NKJV, 12-13)।
এর অর্থ হবে এমন- “আমি (ঈশা/ যিশু) তোমাদেরকে অনেক কিছুই বলতে চাই। কিন্তু তোমরা সেই সমস্ত কিছু এখন সহ্য/ বহন করতে পারবে না। যখন সেই সত্যের আত্মা আসবে, তিনি তোমাদেরকে সমস্ত সত্য বলবেন। তিনি নিজের পক্ষ থেকে কিছুই বলবেন না। যেমনটা শুনবেন, তেমনটাই বলবেন”। এর মানে, ইঞ্জিল চিরদিনের জন্য নয়। এমনকি মানব জাতির জন্যেও নয়। বাইবেলে যিশু/ ঈশা (আ) পরিষ্কার ভাবে বলেছেন- “But He answered and said, “I was not sent except to the lost sheep of the house of Israel” (Matthew, NKJV, 15:24)। আর Romans এ বলা হয়েছে- “For I tell you that Christ has become a servant of the Jews”(Romans, NIV, 15:8)। এরমানে, যিশু/ ঈশা (আ) শুধু ইহুদীদের জন্য এসেছিলেন।
আল্লাহ তার ইচ্ছা অনুযায়ি পূর্ববর্তী কিতাব রদ করেন।
13:39 নং আয়াহ : আল্লাহ তার ইচ্ছা অনুযায়ি (যুগ ও পরিস্থিতি মুতাবিক তার বিধান) রদ করেন এবং বহাল রাখেন [2:106]। কেননা, তার কাছেই রয়েছে উম্মুল কিতাব/ মূল কিতাব [43:4]।
নাবী (সা) এর প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল, শুধু প্রচুর করা।
13:40 নং আয়াহ : আর যদি আমরা সেই ওয়াদার কিছুটা আপনাকে দেখাই, যে ওয়াদা করা হয়েছে। অথবা যদি আপনাকে মৃত্যু [39:30, 21:34] দিই, (তাতে তাদের লাভ কি)?? মূলত আপনার দায়িত্ব প্রচার [88:21] করা এবং আমাদের দায়িত্ব হিসাব গ্ৰহণ করা [13:41, 14:52]।
# মানে, তাদের দাবি অনুযায়ি এক্ষুনি কিয়ামত ঘটাতে হবে, বিষয়টি এরকম নয়। অথবা আপনার মৃত্যু আঁটকে দিতে হবে, বিষয়টি এরকম নয়। আপনার (মুহাম্মাদের) দায়িত্ব শুধু প্রচার করা।
জলভাগ বাড়ছে, স্থলভাগ কমছে, কেননা বরফ গলছে।
13:41 নং আয়াহ : তারা কি দেখেনি যে, আমরা স্থলভাগ কে [21:44] কমিয়ে দিচ্ছি [55:35, 44:10-11]। (জেনে রেখ), আল্লাহ যখন কোনও হুকুম জারি করেন, তখন তার হুকুম জারিতে বাধা দানকারী কেউ নেই [85:16]। কেননা, তিনি হিসাব গ্ৰহণে দ্রুত [13:40]।
13:42 নং আয়াহ : এবং অবশ্যই তাদের পূর্বে চক্রান্ত/ ষড়যন্ত্র করেছিল, সমস্ত চক্রান্ত/ ষড়যন্ত্র ছিল আল্লাহর অধীন [52:42]। তিনি জানেন- প্রত্যেক সত্ত্বা যা কিছু অর্জন করে। কাফির/ সত্য অস্বীকারকারী শীঘ্রই জেনে যাবে- পরবর্তী জীবনের ঘর (জান্নাত) কাদের জন্য [28:83]।
নাবী (সা) এর ভবিষ্যৎ বাণী পূর্ববর্তী কিতাব সমূহে রয়েছে।
13:43 নং আয়াহ : কাফির/ সত্য অস্বীকারকারীরা বলে- “তুমি (মুহাম্মাদ) আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূল/ প্রেরিত নও” [36:3, 48:29]। বলুন- “তোমাদের এবং আমার মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ এবং কিতাবের জ্ঞানী কাফি/ যথেষ্ট, যার কাছে আছে কিতাবের জ্ঞান” [26:196]।